এম. আরিফুল ইসলাম ॥ গ্রেফতার আতংকে আদালতে আতœসমর্পন করছে মাদক বিক্রেতা ও চিহ্নিত সেবন কারিরা। আইনশৃক্ষলা বাহিনীর হাত থেকে প্রানে বাঁচা ও মামলার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যই পুরনো মামলায় আদালতে নিজ ইচ্ছাই হাজিরা দিয়ে কারা ভোগ করছে বহু মাদক বিক্রেতা। আবার কেহ বা নিজ ইচ্ছায় অল্প মাদকসহ থানা পুলিশের হাতে আটক হয়ে হাজতে যাচ্ছে। আর এর একমাত্র কারন কথিত বন্ধুক যুদ্ধের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া। কারন তারা এখনো মনে করছে, সরকার যে কোন মুহুর্থে অভিযান সমাপ্ত করবে আর সেই ফাঁকে তারা হাজত থেকে বের হবে। তাই সাময়িক সময়ে প্রান বাঁচানোর জন্য হাজতবাস করলেও সমস্যা নাই। তবে গোটা আইনশৃক্ষলা বাহিনীর বক্তব্য এবার বাংলাদেশ থেকে মাদক নিয়ন্ত্রন নয়, নির্মূল করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। এটা কোন গ্রুপের কথা নয় সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এমন অভিযান যখন শুরু হয়েছে। তাই এই অভিযানে সকল রাঘব বোয়ালদের আইনের জালে ধরা দিতেই হবে। তাই যারা যারা ইতোমধ্যে আটক হয়েছে এবং যারা আদালতে আতœসমর্পন করে জেল হাজতে রয়েছে সব মিলে ধারন ক্ষমতার বেশি বর্তমানে আসামী রয়েছে বরিশাল কেন্দ্রিয় কারাগারে। তবে পুলিশের তথ্য মতে, নগর পুলিশের ২৬৭ জনের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তার মধ্যে ৪ ভাগের এক ভাগ প্রায়ই আটক হয়েছে। তবে বরিশালে যে সব চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা রয়েছে তারা ধরা ছোয়ার বাহিরে থাকায় প্রানহানির মতো কোন তথ্য এখনো পাওয়া যায়নী। অন্যদিকে বিশ্বস্ত একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন বরিশালের আইনশৃক্ষলা বাহিনীর একটি খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে যারা ডেঞ্জার জোনে রয়েছে। তাদেরকে বিপুল পরিমান মাদক সহ আটকের জন্য ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছে প্রশাসন। বরিশাল মেট্টোসহ জেলা শহরেও একই অবস্থা। প্রতিদিনই আগের চেয়ে প্রায় ৩ গুন আতœসমর্পনের সংখ্যা বেড়ে গেছে। তাছাড়া আদালতে পূর্বের যে সব মাদক মামলা রয়েছে সেগুলো আরো চাঙ্গা হয়ে উঠছে। এখন প্রায় প্রতিদিনই আদালতে মাদক মামলার রায় প্রকাশ হয়। তাই আদালতগুলোতে মাদক মামলার কার্যক্রমগুলো আগের চেয়ে জোড়ালোভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির যুগ্ন সম্পাদক আতিকুর রহমান জুয়েল দৈনিক দখিনের খবর কে বলেন, আদালতে এখন আতœসমর্পনের সংখ্যা প্রায় ৩ গুন বেড়েছে। মাদক বিক্রেতাদের মাঝে ভয় ঢুকে গেছে। যেকোন মূল্যে তারা নিজেদের প্রান বাচাতে চায়। তিনি আরো বলেন, আগে ১০/১২ আতœসমর্পনের ঘটনা ঘটলেও এখন তা বেড়ে ৪০ ঘরে গিয়ে পৌছেছে। সরকার মাদকের বিষয় জিরো টলারেন্স ঘোষনা করার পরপরই আদালতের বিচারিক কাজও বেড়ে গেছে। মাদক মামলাগুলো দ্রুত নিস্পত্তি হচ্ছ্ েএতে করে মামলার জট যেমন কমছে তেমনী সাধারন মানুষের দূর্ভোগও কমেছে। এক হিসেবে দেখা গেছে, বরিশালে যেসব চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ি রয়েছে তারা অনেকেই বর্তমানে বিভিন্ন পেশার সাথে জড়িয়ে পড়ছে। আবার কেহ বা জনপ্রতিনিধির রুপে নিজের নামের পরে যে মাদকের গড ফাদার লেখা ছিলো সেটার পরিবর্তন ঘটাতে চাচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে গতকাল পুলিশের এক বড় কর্তা বলেন, সরকার দলীয় এমপি বদি সাহেব যেখানে কোন ছাড় পাচ্ছেনা সেখানে বরিশালের মাদকের গড ফাদাররা যতো বড়ই জনপ্রতিনিধি হোক আর নেতা হোক চোখের পলকের মধ্যে সাইজ হয়ে যাবে। কারন নগর পুলিশের বর্তমান কমিশনার এ ব্যাপারে জোড়ালো ভুমিকা পালন করছে। এ দিকে দেখা গেছে, চরবাড়িয়ার চিহ্নিত মাদক মাদক ব্যবসায়ি রাসেল গতকাল আদালতে আতœসমর্পন করে স্ব ইচ্ছ্য়া জের হাজতে যায়। ওই এলাকার আরেক মাদদের হোল সেলার সজল খা এখনো রয়েছে আইনশৃক্ষলাবাহিনীর ধরা ছোয়ার বাইরে। তবে সে এলাকা ছাড়া হয়নী কারন সজল এলাকায় নিজেস্ব বাহিনী দ্বারা নিজের ব্যবসা (পুরনো মাল) বিক্রি করাচ্ছে। আর তাদের নামে কোন দিন পত্রিকায় রিপোর্ট হয়, পুলিশ কবে খোজতে যায় সেই খবর রাখে। যদিও সজল এইসব বর্তমানে মোবাইলের মাধ্যমেই করে থাকে। স্থানীয়দের দাবি সজলকে আইনের আওতায় এনে এখনি বিচারের মুখোমুখি না করলে ক’দিন পরেই চরবাড়িয়াসহ গোটা শহরে আবারো মাদকে ভাসাবে ওই সজল। এখনো আটক হয়নি এয়ারপোর্ট থানা এলাকার শার্শি এলাকার কামাল। তাকে আটকের জন্য ইতিমধ্যে পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালালেও তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। কোতয়ালী থানা পুলিশের এক সাব-ইন্সেপেক্টর জানান, কেডিসি ও নামার চরের প্রায় ৭ জন মাদকের সাথে জড়িত যাদের এখনো আটক করা যায়নি। তবে অচিরেই তাদের আটক করা হবে। কিন্তু বেশির ভাগই আটকের আগে আদালতে আতœসমর্পন করছে। যে কারনে তাদের কাছে গচ্ছিত মাদকগুলো উদ্ধার করা হচ্ছেনা। অপর দিকে র্যাব-৮ এর অপস অফিসার এএসপি মুকুর জানান, র্যাবের পক্ষ থেকে জোড়ালোভাবেই অভিযান চলছে। আটক ও উদ্ধার আগের চেয়ে বেড়েছ্।ে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। এদিকে জেলা পুলিশের এক তথ্যে বেড়িয়ে এসেছে গৌরনদীর হীরা মাঝির নাম। গৌরনদীতে হিরা মাঝির একক মাদক ব্যবসা রমরমা। বরিশালের আংশিক স্থানে মাদকের এক সময়ের সাপলাইয়ার হিরা মাঝি। তাকে আটকের জন্য ইতিমধ্যে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ একাধিক ফাঁদ পাতলেও আটক করা আর সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুতই তাকে আটক করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি। এখনো যারা পালিয়ে আছে তাদের আটক হতেই হবে। আর যারা স্ব-ইচ্ছায় আদালতে আতœসমর্পন করে আইনের কাছে ধরা দিয়েছে। আইন আইনের গতিতে তাদের বিচার পরিচালনা করবে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগেই বেশির ভাগ মাদক বিক্রেতারা ধরা পড়ব্ েএবং তাদের আইনের আওতায আসতেই হবে। অন্যথায় আদালতে আতœসমর্পন করতে হবে। হিরা মাঝি সম্পর্কে গৌরনদী থানার ওসি মোঃ মনিরুল ইসলাম মনির বলেন, হিরা মাঝি কে আটকের জন্য অভিযান চলছে। তাকে বর্তমানে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। পেলেই আটক করা হবে। এছাড়াও গৌরনদীতে যারা এখনো তালিকাভুক্ত মাদক বিক্রেতা বা চিহ্নিত সেবনকারি রয়েছে তাদের দ্রুতই আটিক করা হবে।
Leave a Reply